আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচকদের মধ্যে অন্যতম হলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। যদিও তিনি এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সমালোচনা করলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে কখনও যোগ দেননি তিনি। গত বছর ২৩ ডিসেম্বর অর্থাৎ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের ঠিক আগের দিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এরপরই আলোচনায় আসে আওয়ামী লীগে ফিরছেন কাদের সিদ্দিকী। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগে ফেরেননি। কিন্তু আওয়ামী লীগে না ফেরলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে যোগ দেবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ জানুয়ারিতে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে হিসেবে এ বছর হলো নির্বাচনী বছর। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে নানা হিসেব-নিকেশ করে জোট গঠন করবে এটাই স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক জোট গঠনও হয়েছে। সামনে আরও হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগও এই জোট গঠন প্রক্রিয়ায় বাইরে থাকবে তা নিশ্চিত নয়। বরং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল জোটের পরিধি বাড়বে বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিশেষ করে গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের পর কাদের সিদ্দিকীর ভূমিকা সেই বার্তাই দিচ্ছে।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই কাদের সিদ্দিকী বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করছেন। বিশেষ করে গত রোববার জাতীয় পার্টির (জেপি) ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করেছেন। যেখানে ১৪ দল জোটের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ওই জোটে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে জীবনের শ্রেষ্ঠ ভুল বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিজের স্মৃতিচারণ করেন এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গর্ববোধের কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার কোনো বড় বোন ছিল না। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যখন দেখা করি, তিনি আমাকে ভাই বলে ডেকেছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, তোমাকে ভাই বলে ডেকেছি, আজীবন ভাইয়ের মর্যাদা রক্ষা করব। আমি কিন্তু এতো কাঁচা না। আমাকে যে ভাই বলে ডেকে মর্যাদা রক্ষা করতে পারে আমিও ভাইয়ের মর্যাদা রক্ষা করতে পারি। তার জন্য জীবন দিতে পারি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে দেওয়া কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্যে পরিষ্কার যে, তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে যোগ দেবেন এবং ১৪ দলের পরিধি বাড়বে। এখন দেখা বিষয় শেষ পর্যন্ত কি হয়।